জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের দুই ছাত্রনেতা ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি অমর্ত্য রায় এবং সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী কে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘প্রগতিশীল ছাত্র জোট’ এর নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় টিএসসি থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কলাভবনের শ্যাডো অতিক্রম করে শাহবাগ মোড় থেকে ফিরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাগিব নাঈম বলেন, ” ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। ইতিহাস আমাদেরকে শিখিয়েছে কিভাবে সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার আদায় করতে হয়।

যে বাংলাদেশের পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা,সে পুলিশ আমাদের কে নিরাপত্তা দিতে পারে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে কার আগে দালাল হবে, সেই প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত”।

তিনি আরো বলেন,”দাস হওয়ার প্রতিযোগিতায় তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বেচে নেয়। আওয়ামী ইতিহাস ভুলতে পারে। শিক্ষার্থীরা ইতিহাস ভুলতে পারে না।সাধারণ মানুষের পকেট লুট করে কীভাবে ক্ষমতায় থাকায় মত আ যে, সেই চেষ্টা করছে। স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমরাই বিজয়ী হবো”।

ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন,”আজকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধর্ষণ চলছে। সেই ধর্ষণের প্রতিবাদ করা ডামি নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের কাছে অপরাধ।

তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রনেতার এই বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে ফ্যাসিবাদী সরকারের দালালরা।অগণতান্ত্রিক পরিবেশের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা”।

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি সাদিকুল ইসলাম সোহেল, ” অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার পতনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তাই সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কে কারাগার পরিণত করা হয়েছে। কারাগারে দায়িত্ব একেকজন দালাল কে দেওয়া হয়েছে।বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ কে কারা হত্যা করেছে?ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করা যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ মুক্ত হবে না”।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিষ্কৃত দুই ছাত্রনেতার বহিষ্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে বলেন,”এই বাংলাদেশ কারো বাপদাদার সম্পত্তি নয়।আজ হোক, কাল হোক ,সরকারের পতন একদিন হবে। আজীবন ক্ষমতায় থাকা যাবে না”।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা বলেন, “অনির্বাচিত সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে শিক্ষার্থীদের দমনের পথ বেছে নিয়েছে”।

এ সময় ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মোজাম্মেল হক সহ একঝাঁক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।